প্রকাশিত: Thu, Jun 22, 2023 10:48 PM
আপডেট: Sun, May 11, 2025 11:51 PM

ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয়

মোদির সফরকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা

মাজহারুল মিচেল: সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিয়মিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তবে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে তার আগমন হবে তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। সফরকালে তাকে সাউথ লনে স্বাগত জানানো হবে এবং রাতে একটি রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ রয়েছে। সেই সাথে কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ অধিবেশন ভাষণ রয়েছে। ভারতের মোদির আমলে গণতন্ত্রের উদ্বেগজনক অবনতি দেখা দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সফরকে কাজে লাগিয়ে ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করতে পারে এবং অবশ্যই করা উচিত। এমনকি চীনের বিরুদ্ধে ভারতের পক্ষে যে মামলা রয়েছে তার থেকেও এটি বেশি জরুরি। ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অভিভাবক হিসাবে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, কিছু ঘটনা কখনও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। যেমন মোদি রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা না করেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন। এছাড়াও বাইডেনের উচিত মোদীকে মিয়ানমারে সামরিক জান্তার কাছে ভারতের অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার জন্য চাপ দেওয়া।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যদিও বাইডেনের জন্য যেটা বেশি কষ্টকর হবে তা হল মোদির আমলে মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা এবং স্বাধীন নাগরিক সমাজকে শ্বাসরোধ করার মত বিষয়গুলো সামনে এনে কথা বলা। এজন্য রাষ্ট্রপতি বাইডেনকে আরও কৌশলি হতে হবে। বিশেষ করে বাইডেন এবং তার সহকারিরা যারা মোদির সাঙ্গে দেখা করবেন, তাদের তাকে বোঝাতে হবে যেন গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও মর্যাদাশীল হয়ে বিশ্বে ভারতের ক্রমবর্ধমান মর্যাদাকে বাড়িয়ে বা চিত্রিত করতে পারে। একটি দুর্বল গণতন্ত্র একটি দুর্বল ভারতকে পরিচয় করাবে।

একই সময়ে, মোদি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতের উপর ব্যাপক আক্রমণ পরিচালনা করেছেন। সাংবাদিকরা তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছেন, কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন, আবার কেউ কেউ অনলাইন হয়রানির শিকার হয়েছেন। সরকার মালিকদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কসহ অনেক মিডিয়া আউটলেট নিয়ন্ত্রণ করে, সেইসাথে কি ছাপা বা সম্প্রচার করতে হবে সে সম্পর্কে সরাসরি আদেশ দিয়েছে। তাদের অপছন্দের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। মোদি এবং দেশের মুসলমানদের সাথে তার সম্পর্কের বিষয়ে বিবিসি ডকুমেন্টারির প্রতিক্রিয়ায় সরকার তাদের সম্প্রচারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এছাড়াও নয়া দিল্লিতে এবং মুম্বাইয়ে বিবিসি অফিসে অভিযান চালাতে ট্যাক্স এজেন্টদের পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও উদ্বেগজনক হল মোদির বেসরকারী সংস্থা এবং সুশীল সমাজের কর্মীদের উপর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। এগুলির কোনওটিই বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল গণতন্ত্রের পক্ষে উপযুক্ত নয়। 

বাইডেন অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। তবে বাইডেনেরও খোলাখুলিভাবে কিছু বলা উচিত। কারণ বন্ধুদের কাছে সত্য কথা বলা ও শোনানোর বন্ধুদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। 

এদিকে সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সত্ত্বেও ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। এ বিষয়টিও দুই শীর্ষনেতার বৈঠকের আলোচনায় উত্থাপিত হতে পারে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব